স্টাফ রিপোর্টার–
নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুষ বাণিজ্য চলছে রমরমা। এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী এই ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে টনক নড়েছে ভ‚মি অফিসে নায়েব ফয়েজ আহমেদ ও তার পার্সোনাল দালাল চক্রদের। গত কয়েক দিন ধরে তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এমনটাই জানাচ্ছেন এক ভুক্তভোগী । ভুমি অফিসের নায়েব ফয়েজ এই কুকির্তি দামাচাপা দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। শোনা যাচ্ছে তাছাড়া কয়েকজনের টাকাও ফেরত দিবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগি এক নারী কারিমা সংবাদ কর্মীদের জানান যে, নায়েব ফয়েজ আহমেদ ও তার পালিত দালাল জাহিদ অফিসে বসে আমার কাছ থেকে দুইটি জমি খারিজ বাবদ ৫০ হাজার টাকা নেয়। ইতিপূর্বে আমাকে ১টি খারিজ সম্পূর্ণ করে দিলেও অপরটি র্দীঘ তিন মাস যাবৎ ঘুরাচ্ছে এবং তারা আমার কাছে আরো ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। ২০ হাজার টাকা না দিলে আমার জমি খারিজ সম্পূর্ণ হবে না। সাংবাদিকরা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার পর গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দালাল জাহিদ আমার বাড়িতে এসে ১৫ হাজার টাকা আমাকে ফেরত দিতে চায় এবং আমি যেনো কোথাও অভিযোগ না করি সে বিষয়ে অবগত করে কিন্তু আমি তার দেওয়া ১৫ হাজার টাকা আমি রাখিনাই। আমি বলছি যদি টাকা দিতে চান তাহলে পুরা টাকা দিবেন। ।তারা আমাকে অনেক হাত জোড় করে আকুতি মিনতি করে আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। নাম প্রকাশে আনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী আরো জানান এই দালাল জাহিদ বিববা ও অসহায় নারী পেলে তাদের কুপ্রস্তাব দেয় এবং সে রীতিমতো মাদক সেবন করে।
এবিষয়ে চারাবাগ এলাকার বাসিন্দা মোঃ জয়নাল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এই মরজাল ভূমি অফিসে যেদিন থেকে ফয়েজ আহমেদ নায়েব হিসেবে যোগদান করেন তারপর থেকে সরকারি ফি থেকে দশ গুন বেশি অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার পর তারা জমির কাগজ খারিজ করেন । তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দিলে তারা কাজ করে না, বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখিয়ে বাতিল করে দেয়। নায়েব ফয়েজ আহমেদ ও দালাল জাহিদ এই ভুমি অফিস এর মাধ্যমে গ্রাহকদের হয়রানি করে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে পকেট ভারী করে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে দালাল জাহিদ সংবাদ কর্মীকে ম্যানেজ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল খাটাচ্ছেন। অথচ তার নিকট অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে যে টাকা আমি তুলি এই টাকার তিন ভাগ নেয় আমার স্যার (নায়েব ফয়েজ আহমেদ) এবং বাকি এক ভাগ আমি রাখি। এই অফিসে আমি ছাড়াও অনেক লোক আছে নায়েব স্যারের, আমি যদি মাঠ পর্যায়ে কাজ নাও করি উনার অন্য লোকের অভাব নাই, আপনারা আমার পিছনে শুধু একা রিপোর্ট করছেন কেনো। গতকালকে এক মহিলাকে ১৫ হাজার ফেরত দেওয়ার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
বাংলাদেশ সরকার ভূমির নামজারির ফি ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করলেও নায়েব ফয়েজ আহমেদ তার নিজের ইচ্ছা মতো এই টাকার হার নির্ধারণ করেন বলে জানা যায়।
এবিষয়ে মরজাল ভুমি অফিসের নায়েব ফয়েজ আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে, তিনি জানান জাহিদকে তিনদিন আগে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু ঘুষ ও অনিয়মের বিষয়ে ফয়েজ আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। .
এবিষয়ে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে মুটো ফোনে সংবাদ কর্মীদের জানান, এই বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। আমার কাছে এখনো পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ আসে নাই। যেহেতু আপনারা সংবাদ কর্মী এবিষয়ে আমাকে অবগত করেছেন তাই আমি বিষয়টি তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
পরের সংখ্যায় চুখ রাখুন।